অনলাইনে এনআইডি সেবা পাবেন যেভাবে

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারো অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে এখন থেকেই অনলাইনে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এনআইডি কপি সংগ্রহ, সংশোধন, আবেদন ও নতুন ভোটার নিবন্ধন করা যাবে। একই সাথে এসএমএস করে এনআইডি নম্বরও জেনে নেওয়া যাবে। কয়েকদিনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষে আজ থেকে অনলাইনে সেবা দিতে প্রস্তুত বলে অনলাইন ব্রিফিং-এ জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম। সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ব্রিফিং-এ তিনি বলেন, সর্বশেষ ভোটার তালিকা হালনাগাদে যাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তারা অনলাইনে সেবা পাবে। অনলাইনে ও মেসেজে প্রাপ্ত পরিচয়পত্র নম্বর বা অনলাইন কপি দিয়ে একজন নাগরিক সাধারণ এনআইডি কার্ডের মতোই সেবা পাবেন।

এনআইডি ডিজি আরও জানান, অনলাইন, এসএমএস ও অন্যান্য মাধ্যমে লকডাউনের সময়ে নিবন্ধিত ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। এনআইডি নম্বর সংগ্রহ, এনআইডি সংশোধন, হারানো জাতীয়পত্রের জন্য আবেদন ও নতুন ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমও চলবে। নতুন ভোটারদের পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে বায়োমেট্রিক নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এনআইডি হেল্পলাইন কল সেন্টারে ১০৫ নম্বরে ফোন করে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সেবা পাওয়া যাবে। অনলাইনে সেবা পেতে এনআইডি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নির্ধারিত তথ্য দিয়ে সেবা নেওয়া যাবে।

যেসব সেবা পাওয়া যাবে

ক. জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংগ্রহ (ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন কিন্তু এনআইডি কার্ড পাননি)

খ. জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংগ্রহ

গ. জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন

ঘ. হারানো জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন

ঙ. নতুন ভোটার নিবন্ধন

চ. এসএমএস সেবা

প্রক্রিয়া

 

অনলাইনের সেবা পেতে ভোটারকে https://services.nidw.gov.bd সাইটে প্রবেশ করতে হবে।

১. মোবাইলের এসএমএসের মাধ্যমে NID নম্বর পাওয়ার পদ্ধতি –

nid<formNo><dd-mm-yyyy> লিখে 105 প্রেরণ করতে হবে। ফিরতি SMS এর মাধ্যমে NID নম্বর প্রেরণ করা হবে।

উদাহরণ: 105 এ প্রেরণ করুন nid <Form No><dd-mm-yyyy>

nid XXXXXXX 24-08-1992

২. ০২ মার্চ ২০২০ তারিখে সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ভোটার তালিকা প্রকাশিত ৬৯,৫৮,৩৪১ জন নতুন নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে যারা কার্ড পাননি তারা তাদের নিবন্ধন ফরম নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করবেন। পরে বায়োমেট্রিক যাচাই শেষে এনআইডি কপি বা নম্বর পাবেন তারা। তবে দ্বৈত ভোটার হলে এনআইডি কপি বা নম্বর পাওয়া যাবেনা।

৩. যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিন্তু NID কার্ড পাননি তারা https://services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে ‘অন্যান্য তথ্যের’ ট্যাবে গিয়ে NID নম্বর লিংকে Form নম্বর ও DOB (Date of Birth) দিলে আবেদনকারীর NID নম্বর পাবেন।

৪. যারা NID নম্বর পেয়েছেন তারা online portal এ NID এর তথ্য ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করে online portal এ login করতে পারবেন। login এর পর আবেদনকারী ফরমের এন্ট্রিকৃত সকল ডাটা দেখতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশনকৃত ব্যক্তি যদি পূর্বে কার্ড না পেয়ে থাকেন তিনি চাইলে পোর্টাল হতে NID copy সংগ্রহ করতে পারবেন।

৫. কোন ব্যক্তি যদি জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেলেন অথবা সংশোধন করতে চান, তবে তিনি প্রয়োজনীয় দলিলাদি সংযুক্ত করে online এ আবেদন করতে পারবেন। online এ আবেদনকারী NID কার্ডের আবেদনের বর্তমান অবস্থান জানতে পারবেন। আবেদন অনুমোদিত হলে আবেদনকারী sms পাবেন এবং portal হতে পুনরায় NID copy সংগ্রহ করতে পারবেন।

৬. যে সকল যোগ্য নাগরিক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হননি, তারা অনলাইনে (https://services.nidw.gov.bd ) ঠিকানায় ভোটার নতুন নিবন্ধনের আবেদন করে রাখতে পারবেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সংশ্লিষ্ট থানা, উপজেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে এসে বায়োমেট্রিক দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন সম্পূর্ন করবেন। পরবর্তীতে তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে।

৭. রমজান মাসে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের হেল্পলাইন কল সেন্টারে ১০৫ নম্বরে ফোন করে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত সেবা পাওয়া যাবে।

৮. দেশের ৬৪টি জেলার ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের মোবাইল নম্বর online portal এ সংযুক্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার আবেদন সংক্রান্ত যেকোন প্রয়োজনে এই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।

করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর প্রকোপের কারণে প্রথম দফায় গত ১৯ মার্চ থেকে রাজধনীর আগারগাঁও এর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জাতীয় পরিচয় সেবা বন্ধ করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। পরে ২৬ মার্চ থেকে কোভিড প্রাদুর্ভাবের কারণে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে সরকার ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে এর সাথে সমন্বয় করে জাতীয় পরিচয় সেবা বন্ধ রাখা হয়।

তবে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকার কয়েকদফায় জরুরী ছুটি ৫ মে পর্যন্ত বাড়ালেও ছুটির মধ্যেই অনলাইনের মাধ্যমে সংশোধন, তথ্য হালনাগাদের আবেদন ও অনলাইন কপি ডাউনলোডের এই সেবা চালু সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।

কেএ/ডিএ

 

Scroll to Top